সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় রাজ্য দুবাই। পৃথিবীর অন্যতম অভিজাত এয়ারলাইন্স এমিরেটসের কারণে দুবাইয়ে আসা হয় প্রতিদিন লাখো বিমানযাত্রীর। পর্যটকদের জন্য দুবাই অত্যন্ত আকর্ষণীয় শহর। মরুভূমির দেশ দুবাইয়ে রয়েছে উপভোগ করার মতো অনেক কিছু।
বুর্জ আল খলিফা, বুর্জ আল আরব, দুবাই মল, পাম আইল্যান্ড, স্কাইডাইভিং, মরুভূমিতে সাফারি সহ অনেকগুলো আকর্ষণীয় জায়গা ও অ্যাডভেঞ্চারের জন্য বিখ্যাত এ শহরটি। অতীতে দুবাইয়ে ভ্রমণ ভিসার অপব্যবহারের জন্য সব ধরনের ভিসা বন্ধ করে রেখেছিল আরব আমিরাত। ২০১২ সালে বন্ধ হবার পর এ বছর আবার ভিজিট ভিসা দেয়া শুরু করেছে তারা।
ভিসা পাওয়াটাও তেমন কঠিন কিছু নয়। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের হার্ড কপির সাথে সাথে সফট কপি সিডি বা পেনড্রাইভে দিয়ে নির্ধারিত এজেন্সীর মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করলে ১ থেকে ৭ দিনের মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে ই-ভিসা। আর এই ই-ভিসা নিয়ে আপনি ৩০ দিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেন স্বপ্নের এ শহরটিতে।

ভিসা পাওয়ার জন্য ঘোরা থাকতে হবে কয়েকটি দেশ, এরকম কোনো শর্তও নেই। একেবারে খালি পাসপোর্টেও ভিসা পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া আরব আমিরাতে আপনার বসবাসরত আত্মীয়-স্বজনও আপনার হয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে সেক্ষেত্রে আবেদন প্রক্রিয়া একটু জটিল ও খরচসাপেক্ষ বটে, তার চেয়ে এজেন্সীগুলোর মাধ্যমে দেশ থেকে আবেদন করাই ভালো। খরচ ও সময় কম লাগে। এছাড়া ডিপোজিট সংক্রান্ত জটিলতাও নেই।
এখন দু’ধরনের ভিসা চালু আছে। যার একটি ৯৬ ঘণ্টার ট্রানজিট ভিসা আর অন্যটি ৩০ দিনের ভ্রমণ ভিসা। ৯৬ ঘন্টার ট্রানজিট ভিসা অবশ্য সব সময় খোলা ছিল আগে। ইউরোপ বা আমেরিকা বা অন্য কোনো দেশের ভিসা থাকলে সেখানে যাওয়ার সময় “অন এরাইভাল”ও পাওয়া যায় এই ভিসা। ১০০ ডলারের বিনিময়ে তৃতীয় দেশটির ভ্যালিড ভিসা ও বিমান টিকেট দেখিয়ে এই ভিসা নেয়া যায়।

এখন অবশ্য ট্রানজিট ভিসাও দেশ থেকে নিয়েই যাওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে টিকেটের তথ্য ও অন্যান্য তথ্য পূরণ করে আবেদন করলে হবে। আর ৩০ দিনের ভিজিট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়াও একই রকম, তবে খরচটা দ্বিগুণ পড়বে। দুবাই ইলেকট্রনিক ভিসা সেন্টার বাংলাদেশের তথ্য অনুসারে ৯৬ ঘণ্টার ট্রানজিট ভিসার জন্য খরচ পড়বে ৪,০০০ টাকা। আর ৩০ দিনের অবকাশ ভিসার জন্য খরচ পড়বে ১১,০০০ টাকা। তবে মেয়েদের জন্য ৩০ দিনের ভিসার খরচ ৭,৯০০ টাকা।
ভিসার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র লাগবে সেগুলো নিচে দেয়া হলো:
১. ঠিকভাবে পূরণকৃত ভিসার আবেদন পত্র
২. রিটার্ন টিকেট অথবা অনওয়ার্ড টিকেট (অবশ্যই এমিরেটসের। এ শর্ত শুধুমাত্র দুবাই ইলেকট্রনিক ভিসা সেন্টার, সায়মন হলিডেজ থেকে নিলে। অন্য ট্রাভেল এজেন্সিগুলো এ শর্তটি দেয়নি)
৩. পাসপোর্টে অন্তত ছয় মাসের মেয়াদ থাকতে হবে।
৪. পাসপোর্টের ফটোকপি ও অন্য দেশের ভিসা থাকলে সে পৃষ্ঠাগুলো কপি (পেন ড্রাইভ বা সিডিতে সফট কপি)
৫. নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে ফরোয়ার্ডিং লেটার ও ট্রেড লাইসেন্সের (পেন ড্রাইভ বা সিডিতে সফট কপি)
৬. দুজন ব্যক্তির রেফারেন্স
৭. নিজ কোম্পানি বা ট্রাভেল এজেন্ট কর্তৃক প্রদত্ত গ্যারান্টি
ঠিকভাবে ডকুমেন্টগুলো সহ সাবমিট করার ১ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ভিসা চলে আসবে। সায়মন হলিডেজের অফিস খোলা থাকে সপ্তাহে ছয় দিন। তবে জমা দেয়া ও ভিসা সংগ্রহের জন্য ভিসা সংগ্রহের সময়সূচী নিম্নরূপ:
রবি থেকে বৃহস্পতিবার:
ভিসার আবেদন পত্র গ্রহণ সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা
ভিসা সংগ্রহ সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা
শনিবারে:
ভিসার আবেদন পত্র গ্রহণ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা
ভিসা সংগ্রহ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা
সায়মন গ্রুপের বিস্তারিত ঠিকানা:
Dubai Electronic Visa Centre
Saimon Centre, House # 4A, Road # 22
Gulshan commercial area, Dhaka-1212
Tel : 9898207(Direct), 88-02-9882273-74, 9885307-08, 9881408, 9860393, 9885314 Ext-128
Fax : 88-02-9881337, 8829374
www.dubaivisabd.com
অন্যান্য এজেন্সীগুলো খরচ একটু বেশি হলেও কাগজপত্র বলতে গেলে তেমন কিছুই লাগে না। বাকিটা এজেন্সিগুলো নিজেরাই ব্যবস্থা করে নেয়। অনেকগুলো এজেন্সী আবার ভিসা পাবার নিশ্চয়তা দেয় এবং ভিসা পাবার পরে টাকা নেয়। সেগুলোর সাথে কথা বলে দেখতে পারেন। মোটামুটি ১২,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা খরচ পড়ে। তবে সুবিধা হচ্ছে এমিরেটস এয়ারলাইন্সে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই, আপনি আপনার সুবিধামতো ক্যারিয়ারে দুবাই যেতে পারেন।

আর মাত্র ১ দিন পরে দুবাইয়ে শুরু হতে যাচ্ছে এবারের এশিয়া কাপ। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, হংকং ও আফগানিস্তানের অংশগ্রহণে শুরু হতে যাচ্ছে এশিয়া কাপের ১৪ তম আসর। খেলা চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ সময়ে দুবাই ঘোরার পাশাপাশি উপভোগ করতে পারবেন দেশের খেলাও।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের গ্রুপ পর্বের দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ১৫ই সেপ্টেম্বর ও ২০ সেপ্টেম্বর। গ্রুপ পর্ব পার হতে পারলে ২১ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর সুপার ফোর রাউন্ড খেলতে পারবে। খেলা যদি ধরতে না পারেন তাও কোনো সমস্যা নেই। দুবাইয়ে অ্যাডভেঞ্চার একটিভিটিজের কোনো কমতি নেই। আর শপিংয়ের জন্য তো সারা পৃথিবীজুড়ে খ্যাতি তাদের।
তবে একটা অনুরোধই সবার কাছে করবো, দয়া করে ভিজিট ভিসা নিয়ে দুবাই গিয়ে সেখানে থেকে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। ভিসার এ ধরনের অপব্যবহার ও ভিসা জালিয়াতির জন্যই ২০১২ থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল আরব আমিরাতের সব ধরনের ভিসা। তাই এ বিষয়টা অবশ্যই সবাই মাথায় রাখবেন এবং বিদেশে নিজের দেশকে ছোট করবেন না।