বন জঙ্গল, পাহাড়-পর্বত, নদী-হ্রদ ও প্রাকৃতিক বৈচিত্রের এক অপরূপ সমাহার জার্মানির ন্যাশনাল পার্ক আইফেল।
২০০৪ সালে, জার্মানির নর্থ-রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের প্রথম ও একমাত্র জাতীয় উদ্যানের মধ্যে কাঠ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ আরোহণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তারপর থেকে এই উদ্যানটি পুনরায় তার শত বছর পূর্বের রূপে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পেতে থাকে। ফলস্বরূপ, প্রায় ১,৬০০ প্রজাতির বিপন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতি এই অঞ্চলকে নিজেদের আবাসস্থল করে নিয়েছে। প্রায় ১১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আচ্ছাদিত জাতীয় উদ্যানটি দর্শকদের জন্য বন্য বিড়াল দর্শন, বন্য হরিণের ডাক শোনা কিংবা কখনো কখনো বিপন্ন প্রজাতির কালো সারস দেখার সুযোগ করে দিতে পারে।
জার্মানিতে অবস্থিত কোলোন শহর থেকে মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে এই পার্কটি অবস্থিত। যারা এই পার্কটিতে হাইকিং করতে চান তাদের জন্য আছে ২৪০ কিলোমিটার জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ি পথ। বছরের বিভিন্ন ঋতুতে উদ্যানটি নানারূপ সৌন্দর্যে বিকশিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, শরৎকালে হলুদ রঙে ছেয়ে যায়, শীতকালে শুভ্র তুষারের মাঝে রহস্যময় পায়ের ছাপ দেখা যেতে পারে। মাঝে মাঝে কষ্টসাধ্য আরোহণ সার্থক হবে রুরশী, অবারশী ও উফতশী নামক লেকগুলোর সৌন্দর্য দেখে।
ন্যাশনাল পার্ক আইফেলে রয়েছে প্রায় ১০৪ কিলোমিটার বাইসাইকেল পথ। টুরিজম কোম্পানিগুলো থেকে সাধারণ বাইসাইকেল, মাউন্টেন বাইক ও ব্যাটারি চালিত সাইকেল ভাড়া পাওয়া যাবে।
আইফেলের সুবিশাল পাহাড়ে ঘেরা লেকগুলোর মধ্যে দিয়ে নৌকা ভ্রমণ এনে দিতে পারে এক অনন্য প্রশান্তি। রুর-লেক শিপিং কোম্পানি তাদের ইলেক্ট্রিক বোটগুলো এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পরিচালনা করে। এছাড়াও বাকি লেকগুলোতে বিভিন্ন প্রকার বোটে ভ্রমণ ও বোট ভাড়া পাওয়া যাবে।
গ্রীষ্মের দিনে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে দ্রাইবন প্লাটাও (Dreiborn plateau) এলাকায় ঘুরতে যাওয়া যাবে। এই ঘোড়ার গাড়িটি ভগেলসাং (Vogelsang) ও উলসাইফেন (Wollseifen) নামক দুটি স্থানের মধ্যে চলাচল করে।
কীভাবে যাবেন:
আইফেল ন্যাশনাল পার্ক, জার্মান ফেডারেল স্টেট নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। ন্যাশনাল পার্কের কাছাকাছি বড় শহরগুলো হচ্ছে, আখেন (প্রায় ৫০ কিলোমিটার), কোলন (প্রায় ৭০ কিলোমিটার), ডুরেন (প্রায় ৩৫ কিলোমিটার), প্রাক্তন পশ্চিম-জার্মান রাজধানী “বন” (প্রায় ৮৫ কিলোমিটার)। গাড়ি নিয়ে ভ্রমণের সময়, পার্কের সংরক্ষিত এলাকা শুরুর যে কোনো প্রবেশ পথেই রয়েছে বিস্তারিত তথ্য। এসব প্রবেশ পথে আপনি বিভিন্ন তথ্য সংবলিত লিফলেট পাবেন। এছাড়াও, কেউ যদি পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে পার্কে যেতে চান তাদের জন্য বাস এবং ট্রেনের সময়সূচী পাওয়া যাবে ডিবি (db navigator) নামক ওয়েবসাইট ও অ্যাপস থেকে।
তথ্যসূত্র:
১। www.nationalpark-eifel.de
২। https://www.nrw-tourism.com
BY: তামান্না ইয়াসমিন